ঢাকা , বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫ , ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
মূল ফোকাস জাতীয় নির্বাচন টার্গেট ফেব্রুয়ারি এপ্রিল : সিইসি প্রতিবছর জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণের অঙ্গীকার জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার ইস্যুতে ঐকমত্যে অনিশ্চয়তা ইরান থেকে ঢাকায় পৌঁছালেন ২৮ বাংলাদেশি ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে হবে বিদ্যুতের ১০ সাবস্টেশন নির্মাণ হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিদের দ্রুত বিচারের দাবি শেষবারের মতো পর্দায় ফিরছে ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’ শুধু পুরুষদের বিনোদনের জন্য ভাবা হতো আমাকে : স্কারলেট মাফিয়া চক্র নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন আমির খান বিজয়ের সঙ্গে প্রেমের গুজব নিয়ে মুখ খুললেন ফাতিমা এবার পাইরেসির কবলে পড়লো ‘কান্নাপ্পা’ ব্যস্ততার মাঝেই জন্মদিন পালন করলেন জয়া শাকিব খানকে ‘মেগাস্টার’ বলতে নারাজ জাহিদ হাসান নিজের মৃত্যুর গুজব নিয়ে যা জানালেন মাহি আবারও ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম তিন বিমানবন্দরে ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস অভিযোগ আমলে নিয়ে পলাতক ২৬ জনকে গ্রেফতারের নির্দেশ ছয় মাসে কর্মস্থলে ঝরেছে ৪২২ শ্রমিকের প্রাণ
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলন

থ্যালাসেমিয়া রোগী বাড়ছে

  • আপলোড সময় : ০৭-০৫-২০২৫ ০৫:৩২:২০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৭-০৫-২০২৫ ০৫:৩২:২০ অপরাহ্ন
থ্যালাসেমিয়া রোগী বাড়ছে
প্রতিবছর থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নেয় ৬ থেকে ৮ হাজার শিশু। বর্তমানে দেশে এ রোগীর সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ হাজার বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে থ্যালাসেমিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিবছর থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নেয় ৬ থেকে ৮ হাজার শিশু। বর্তমানে দেশে এ রোগীর সংখ্যা ৬০ থেকে ৭০ হাজার। তবে আক্রান্ত শিশুর জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) করে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব। সচেতন হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সহজ। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। ৮ মে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহযোগিতায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘থ্যালাসেমিয়ার জন্য সামাজিক ঐক্য গড়ি, রোগীর অগ্রাধিকার নিশ্চিত করি’। সম্মেলনের শুরুতেই থ্যালাসেমিয়া রোগটি নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপনা তুলে ধরেন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ও মুগদা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। এ রোগে হিমোগ্লোবিনের গঠন নির্ধারণকারী জিন ত্রুটিযুক্ত হয়। এই জিনের একটি অংশ যদি ত্রুটিযুক্ত হয়, তখন সেই ব্যক্তি হবেন বাহক। তাই বাবা ও মা দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, শুধু তখনই তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মানোর ঝুঁকি থাকে। একজন বাহক কিন্তু অন্যজন বাহক না হলে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জরিপের বরাত দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, বাংলাদেশের ১ কোটি ৮২ লাখের বেশি মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক, যা মোট জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ (বিবিএস)। বাহকের এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেই সঙ্গে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও। এই রোগের লক্ষণ নিয়ে অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস তার উপস্থাপনায় বলেন, শিশুর জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। যেমন শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া, শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন রোগসংক্রমণ, খেতে না চাওয়া, ওজন না বাড়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। এ রোগে অনেক সময় শিশুর পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যেতে পারে। বিয়ের আগে দুজনকেই একটি রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। এটিকে বলা হয় সিবিসি টেস্ট বা কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট টেস্ট। এই একটি পরীক্ষা করতে খরচ হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এ ছাড়া রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বিশ্লেষণ করে অথবা ডিএনএ বা জেনেটিক পরীক্ষা মাধ্যমেও থ্যালাসেমিয়ার বাহক শনাক্ত করা যেতে পারে। এই চিকিৎসক বলেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগীকে সারা জীবন ভুগতে হয়। মাসে মাসে রক্ত নেয়া ছাড়াও নিতে হয় অন্যান্য অনেক চিকিৎসা। থ্যালাসেমিয়ার রোগীরা হৃদ?রোগ, যকৃতের রোগ, ডায়াবেটিস এমনকি বন্ধ্যাত্বেও ভোগেন। তাই শিশুর জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া শনাক্ত করে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন) করে শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব বলে জানান এই চিকিৎসক। চিকিৎসার চেয়ে সচেতনতার মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ করা বেশি সহজ উল্লেখ করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, বাহককে জানতে হবে যে তিনি বাহক। তিনি এমন একজনকে বিয়ে করবেন, যিনি বাহক নন। তাহলে তাদের সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার কোনো ভয় থাকবে না। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে দুজন বাহককে বিয়ে করতে নিরুৎসাহিত করেন চিকিৎসক জান্নাতুল। তবে দুজন বাহকের বিয়ে হয়ে গেলে এবং তারা সন্তান নিতে চাইলে তাদের অবশ্যই প্রিন্যাটাল বা প্রসবপূর্ব পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসাধীন থাকার পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, গর্ভাবস্থার ১২ থেকে ১৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের শিশুর থ্যালাসেমিয়া আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সারা জীবন রক্ত নিয়ে বেঁচে থাকতে হয়। চিকিৎসায় ন্যূনতম মাসিক খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে যে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে হয়, তাতে খরচ ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দা মাসুমা রহমান বলেন, যিনি থ্যালাসেমিয়ার বাহক, তিনি কিন্তু রোগী নন। এটি অবশ্যই ভালো যে রোগটির কোনো লক্ষণই বাহকের শরীরে প্রকাশ পায় না। কিন্তু বাহক যদি না জেনে আরেকজন বাহককে বিয়ে করেন, তাহলে তাদের সন্তান গুরুতর থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মাতে পারে। এটি প্রতিরোধে তাই ব্যক্তিপর্যায়ের জনসচেতনতা প্রয়োজন। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে তরুণদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানিয়ে সৈয়দা মাসুমা রহমান বলেন, বিয়ের আগে একটি ছোট্ট পরীক্ষাই পারে আপনার ভবিষ্যৎ পরিবারকে রক্ষা করতে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স